অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি টিউটোরিয়াল -০৪

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা

তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি

সহকারী শিক্ষক, ভিক্টোরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা
তৃতীয় অধ্যায়
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির নিরাপদ ও নৈতিক ব্যবহার
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন : চোরাই কপি বলতে কী বোঝ? কয়েকটি সাইভার অপরাধ সম্পর্কে যা জান বর্ণনা কর।
উত্তর : চোরাই কপি- কোনো সৃজনশীল কর্মের কপিরাইট ভঙ্গ করে, যদি সে পুনরুৎপাদন করা হয়, তখন সেটিকে চোরাই কপি বলা হয়।
কয়েকটি সাইবার অপরাধ : তথ্যপ্রযুক্তি এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে এই অপরাধগুলো করা হয় এবং অপরাধীরা সাইবার অপরাধ করার জন্য নিত্য নতুন পথ আবিষ্কার করে যাচ্ছে। এ মুহূর্তে প্রচলিত কিছু সাইবার অপরাধ এ রকম-
স্প্যাম : আমরা যারা ই-মেইল ব্যবহার করি তারা সবাই কম বেশি এই অপরাধটি দিয়ে আক্রান্ত হয়েছি। স্প্যাম হচ্ছে যন্ত্র দিয়ে তৈরি করা অপ্রয়োজনীয়, উদ্দেশ্যমূলক কিংবা আপত্তিকর ই-মেইল, যেগুলো প্রতি মুহূর্তে আমাদের কাছে পাঠানো হচ্ছে। স্প্যামের আঘাত থেকে রক্ষা করার জন্য নানা ধরনের ব্যবস্থা নিতে গিয়ে সবার অনেক সময় এবং সম্পদের অপচয় হয়।
আপত্তিকর তথ্য প্রকাশ : অনেক সময়েই ইন্টারনেটে কোনো মানুষ সম্পর্কে ভুল কিংবা আপত্তিকর তথ্য প্রকাশ করে দেয়া হয়। সেটি শত্রুতামূলকভাবে হতে পারে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হতে পারে কিংবা অন্য যে কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে হতে পারে। তথ্য প্রকাশ করে বিদ্বেষ ছড়ানোর চেষ্টা করায় বাংলাদেশে কয়েকবার ইন্টারনেটে ফেসবুক বা ইউটিউবের মতো জনপ্রিয় সেবা বন্ধ রাখতে হয়েছিল।
হুমকি প্রদর্শন : ইন্টারনেট, ই-মেইল বা কোনো একটি সামাজিক হুমকি যোগাযোগের সাইট ব্যবহার করে কখনও কখনও কেউ কোনো একজনকে নানাভাবে জ্বালাতন করতে পারে। ইন্টারনেটে যেহেতু একজন মানুষকে সরাসরি অন্য মানুষের মুখোমুখি হতে হয় না, তাই কেউ চাইলে খুব সহজেই আরেকজনকে হুমকি প্রদর্শন করতে পারে।
সাইবার যুদ্ধ : ব্যক্তিগত পর্যায়ে একজনের সঙ্গে আরেকজনের সংঘাত অনেক সময় আরও বড় আকার নিতে পারে। একটি দল বা গোষ্ঠী এমনকি একটি দেশ নানা কারণে সংঘবদ্ধ হয়ে অন্য একটি দল, গোষ্ঠী বা দেশের বিরুদ্ধে এক ধরনের সাইবার যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারে। ভিন্ন আদর্শ বা ভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে এবং সেখানে অনেক সময়ই সাইবার জগতের রীতিনীতি বা আইনকানুন ভঙ্গ করা হয়।
৬. প্রশ্ন : দুর্নীতি নিরসনে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার লিখ।
উত্তর : দুর্নীতি নিরসনে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিচে দেয়া হল-
১. বর্তমানে তথ্য সংরক্ষণ এবং প্রক্রিয়া করার জন্য পুরো পদ্ধতিকেই তথ্যপ্রযুক্তির আওতায় আনতে হয়েছে। তাই কোনো তথ্য ভুল হলে বা লেনদেনে অনিয়ম হলে তা সহজেই সবার সামনে প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে।
২. টেন্ডার প্রক্রিয়াটি আগে লিখিতভাবে হতো, কিন্তু বর্তমানে ই-টেন্ডারিংয়ের মাধ্যমে এর আর্থিক লেনদেনে বা টেন্ডার চুরির ঘটনা কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশে ই-টেন্ডার করার জন্য বিশেষ পোর্টাল তৈরি হয়েছে।
৩. ই-কমার্স প্রক্রিয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য হওয়ার কারণে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। যাতে মধ্যভোগী লোকেরা কোনো সুযোগ নিতে পারছে না।
৪. পরীক্ষার ফলাফল দেখার ক্ষেত্রে ওএমআর পদ্ধতি ব্যবহার করায় দুর্নীতির কোনো সুযোগ থাকছে না।
৫. এখন ইন্টারনেটের কারণে, মিডিয়ার কারণে ক্ষমতাশীল মানুষের বিরুদ্ধে, তাদের অন্যায় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মানুষের মতামত প্রদানের এবং একত্র হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এতে কেউ চাইলেই দুর্নীতি করতে পারবেন না।

No comments

Powered by Blogger.